শাক-সবজির মধ্যে বেশ পরিচিত একটি নাম পাট শাক। তবে তিতো বা তেতো স্বাদের কারণে অনেকেই এই শাক খেতে চান না।তা সত্ত্বেও এই শাকের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ।
পুষ্টিগুণে ভরপুর এই শাক মানুষের শরীরের নানা ধরনের উপকার করে থাকে। এদিকে বাজারে মিষ্টি ও তেতো দুই ধরনের পাট শাক পাওয়া যায়।তবে পাট শাক ক্রুশিয়াস প্রজাতির শাক হওয়ায় এটি ব্রকলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, অ্যাস্পারাগাসসহ এই জাতীয় অন্যান্য সবজির মতো শরীরে ডি-টক্সিফাইয়ের কাজ করে। এই প্রজাতির শাক-সবজি মানব দেহের ক্যান্সার প্রতিরোধেও দারুণ ভূমিকা গ্রহণ করে।তবে গরমের মৌসুম পড়তেই নতুন করে বাজারে দেখা মেলে এই শাকের।গরমের দিনে এই শাক খাওয়ায় উপকার রয়েছে অনেক।এই শাক দিয়ে বহু ধরনের রান্না পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে।তবে বেশির ভাগ বাড়িতে হালকা তেতো প্রকৃতির পাটশাক বেশি খাওয়া হয়ে থাকে।অনেকে গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে পাটশাকের হালকা ঝোল খেয়ে থাকেন।আবার অনেকে সুগার কমাতে এবং কৃমি নাশ করতে পাট পাতা শুকিয়ে তা জলেতে ভিজিয়ে রেখে সেই জল খেয়ে থাকেন। তবে আরো বহু পদ্ধতিতে এই পাটশাক খাওয়া যায়। এখন প্রশ্ন হল,এই পাটশাক খেলে আর কী কী উপকার হয়।পাটশাকের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকায় এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে থাকে।পাটশাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি হজম প্রক্রিয়াতে দারুণ সহায়তা করে থাকে।এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও অনেকটাই উপকারী। এ ছাড়া এই শাক রুচি বাড়াতেও বেশ কার্যকর। এছাড়া,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে,পাটশাকের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় এটি মানুষের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত এ শাক খেলে বিভিন্ন ধরনের রোগের সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়। আবার,ত্বকে তারুণ্য ধরে রাখে পাটশাক।পাটশাকে থাকা ভিটামিন সি মানব দেহের ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ত্বকের ক্ষতিকর ফ্রি-র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে ত্বকের তারুণ্যকে ধরে রাখতে ব্যাপক সাহায্য করে।অন্যদিকে,পাটশাকের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।যা দৃষ্টিশক্তি উন্নত রাখতে দারুণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে।বিশেষজ্ঞদের মতে, ম্যাগনেসিয়াম হতাশা দূর করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে। আর এই পাটশাকের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে ম্যাগনেসিয়ামের উপস্থিতি থাকায় এটি মুড ভালো রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এই খনিজ মানসিক চাপ ও অনিদ্রায় ভোগা মানুষদের জন্য দারুণ উপকারে আসে।তবে, পুষ্টিগুণ ও উপকার থাকা সত্ত্বেও পাট শাক খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানা উচিত।
যদি কারো অ্যালার্জি থেকে থাকে, সে ক্ষেত্রে এই শাক খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ পাটশাক অ্যালার্জি রোগে আক্রান্ত মানুষদের সাময়িকভাবে ভোগান্তি বাড়িয়ে তুলতে পারে।